করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট জালিয়াতির মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এবং তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ আট আসামিকে বৃহস্পতিবার ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হয়। আজই আদালতে শুনানি শুরু হবে।
আসামিপক্ষের কয়েকজন আইনজীবী আদালতের কাছে অভিযোগ করেন, তারা এই মামলার কাগজপত্রের কপি পাননি। এ কারণে তারা মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করতে পারেননি। এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন দিন ধার্য করা হোক।
এই আবেদনের বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলি আবু আবদুল্লাহ। তিনি আদালতকে বলেন, এ মামলাটি একটি আলোচিত মামলা। এ মামলার অন্য আসামিরা মামলার কাগজপত্রের কপি পেয়েছেন। যারা কাগজপত্র পাননি, সেটি তাদের ব্যর্থতা। আমরা চাই, আজ এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি হোক। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ম্যাজিস্ট্রেট সরাফুজ্জামান আনসারী এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বেলা আড়াইটার সময় ঠিক করেন।
এর আগে সকালে জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ এবং তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ অন্য আসামিদের কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতের এজলাসে তোলা হয়।
আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবরিনা এবং তার স্বামী আরিফুল পরস্পরের সাথে কথা বলেন। বেশ কয়েকবার তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলেন।
৫ আগস্ট ভুয়া করোনার রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীসহ আটজনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিএমপি)।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, করোনা জালিয়াতিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন জেকেজির সাবরিনা এবং তার স্বামী জেকেজির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক চৌধুরী। এ দু’জন ছাড়াও মামলার অন্য ছয় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হলেন জেকেজির সমন্বয়ক সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির সাবেক কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম ও জেবুন্নেসা। মামলা থেকে মামুনুর রশীদ নামের আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মামলা করার ৪২ দিনের মাথায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
করোনার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে গত ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্মচারী হুমায়ুন কবির এবং তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। পরের দিন ২৪ জুন হুমায়ুন কবির ও তানজিনা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে হুমায়ুন কবীর জেকেজি হেলথ কেয়ারে চাকরি করার সময় কীভাবে করোনার নমুনা সংগ্রহ এবং ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেছেন, এ ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
জবানবন্দিতে হুমায়ুন কবির বলেন, করোনার নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা না করে ড্রেনে ফেলে দিতেন। এ ছাড়া শফিকুল ইসলামও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
Leave a Reply